ইটাচুনা
ইটাচুনা হুগলি জেলার একটি গ্রাম। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার চুঁচুড়া মহকুমার পান্ডুয়ার সি ডি ব্লকের ইটাচুনা-খন্যানের একটি গ্রাম পঞ্চায়েত। জনসংখ্যার উপাত্ত২০১১ সালে ভারতের জনগণনা অনুসারে, ইটাচুনার মোট জনসংখ্যা ছিল ১,৪৫১ জন, যার মধ্যে ৭৩৫ (৫১%) জন পুরুষ এবং ৭১৬ (৪৯%) জন মহিলা ছিলেন। ৬ বছরের নিচের জনসংখ্যা ছিল ১৪৬। ইটাচুনায় মোট সাক্ষরের সংখ্যা ছিল ১,০৩৪, যা ৬ বছরেরও বেশি জনসংখ্যার ৭৯.২৩%।[১] পরিবহনপোলবা-খন্যান রোডের একটি ছোট অংশ ইটাচুনাকে সড়কপথে এসএইচ ১৩ অথবা জিটি রোডের সাথে সংযুক্ত করেছে।[২][৩] রেলপথে এর নিকটতম রেলওয়ে স্টেশনটি হল খন্যান রেল স্টেশন। এটি হাওড়া-বর্ধমান মূল লাইনের একটি কলকাতা শহরতলির রেলস্টেশন যা ভারতীয় রেলের পূর্ব রেলওয়ে অঞ্চল দ্বারা পরিচালিত। শিক্ষাএখানে একটি সাধারণ স্নাতক মহাবিদ্যালয় রয়েছে। তার নাম বিজয় নারায়ণ মহাবিদ্যালয়। এটি ১৯৫০ সালে ইটাচুনায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কাজ করে এবং এখানে বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, দর্শন, অর্থনীতি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা এবং পুষ্টি বিষয়ে সাম্মানিক স্নাতক কোর্স করার সুযোগ রয়েছে, ছাত্র এবং ছাত্রী উভয়ের জন্যই।[৪][৫] সংস্কৃতিইটাচুনা রাজবাড়ীটি "বর্গী ডাঙ্গা" নামেও পরিচিত"।[৬] এই শব্দটি বর্গীদের বাংলা আক্রমণ থেকে এসেছে। মারাঠা যোদ্ধাদের এখানকার বাঙালিরা বর্গী নামে সম্বোধিত করত। একটা সময় ছিল যখন মারাঠরা চৌথ আদায় করার জন্য বারবার বাংলায় আক্রমণ করত। বিহার, উড়িষ্যা ও বাংলার নবাব (সুব-এ-দার) দ্বারা প্রদত্ত করের ১/৪ অংশ ছিল চৌথ। সেটি মারাঠারা দাবি করত। মীর হাবিবকে হত্যার পরে মারাঠা যোদ্ধারা তাদের আক্রমণ বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে তারা উড়িষ্যার উপর নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছিল এবং সেই নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে অনেক মারাঠা বর্গী বাংলায় থেকে গিয়ে তাদের নিজস্ব বাণিজ্য শুরু করে। তারা প্রচুর সম্পদ অর্জন করেছিল। এইরকম একজন মারাঠা যোদ্ধা কুন্দন, এই ইটাচুনাতে বসতি স্থাপন করে। বর্তমানে এরা কুন্ডু নামেও পরিচিত। ইটচুনা রাজবাড়িটি ১৭৬৬ সালে সাফল্য নারায়ণ কুন্ডুর পূর্বপুরুষদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, তখন তারা কুন্দন নামেই পরিচিত ছিল।[৭] এটি এখন হুগলি জেলার একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এখন প্রাসাদটি ঐতিহ্যবাহী পান্থাবাসে (হোটেল) রূপান্তরিত হয়েছে। এটি অনেকগুলি হিন্দি এবং বাংলা চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের স্থান হিসাবেও পরিচিত, এর মধ্যে রয়েছে লুটেরা, পরাণ যায় জ্বলিয়া রে, রাজমহল ইত্যাদি চলচ্চিত্র।[৮][৯] তথ্যসূত্র
|