জোকো উইদোদো
জোকো "জোকোউয়ি" উইদোদো (জাভানীয়: Jåkå Widådå; পুরনো-জাভানীয়: Jaka Widada; জন্ম ২১ জুন ১৯৬১) হলেন ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান রাষ্ট্রপতি। ২০১২ থেকে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ইনি জাকার্তার গভর্নর এবং ২০০৫ থেকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সুরাকার্তার মেয়র ছিলেন। রাজনৈতিক অভিজাত বা সেনাবাহিনীর অফিসার বৃত্তের বাইরে থেকে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি হওয়া তিনি প্রথম ব্যক্তি।[১] ২০১২ খ্রিষ্টব্দে জোকো উইদোদো তার দল ইন্দোনেশিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ স্ট্রাগল কর্তৃক জাকার্তার গভর্নর নির্বাচনের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। বাসুকি জাহাজা পুরনামা ছিলেন তার রানিং মেট।[২] সে বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের পর জোকো উইদোদো জাকার্তার গভর্নর নির্বাচিত হন এবং এতে তিনি তৎকালীন গভর্নর ফাউজি বোয়োকে পরাজিত করেন।[৩] তার বিজয়কে ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতিতে পুরনো ধাচের রাজনীতির বদলে নতুন বা স্বচ্ছ নেতাদের প্রতি ভোটারদের সমর্থনের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হয়।[৪] ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মার্চ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে তার দলের তরফ থেকে তার নাম ঘোষিত হয়।[৫] সে বছরের ৯ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফল নিয়ে কিছু বিতর্কের পর ২২ জুলাই নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার নাম ঘোষিত হয়। ইতিপূর্বে তার প্রতিপক্ষ প্রাবুয়ু সুবিয়ান্তো জুজুহাদিকুসুমুর বিপক্ষে ৫৩% এর বেশি ভোট পাওয়ায় তিনি ইন্দোনেশিয়ার নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বিজয়ী ঘোষিত হয়েছিলেন। গণনা শেষ হওয়ার পূর্বে সুবিয়ান্তো প্রশ্ন তোলেন এবং নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।[৬] প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষাজোকো উইদোদো জাভানিজ বংশোদ্ভূত। নাম পরিবর্তনের আগে তাকে মুলয়ুনু ডাকা হত। এধরনের নাম পরিবর্তন জাভায় হয়ে থাকে।[৭] তার বাবা কারানগানয়ার এবং তারা দাদা বুয়ুলালির গ্রাম থেকে এসেছিলেন।[৮] অস্বচ্ছল নাগরিকদের স্কুল বলে পরিচিত স্টেট প্রাইমারি স্কুল ১১১, টিরটুয়ুসুতে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়।[৯] ১২ বছর বয়সে তিনি তার বাবার আসবাবপত্রের দোকানে কাজ শুরু করেন।[১০][১১] শৈশবে তিনবার উচ্ছেদের অভিজ্ঞতা তার চিন্তা এবং সুরাকার্তার মেয়রের দায়িত্বে প্রভাব ফেলে যখন তিনি শহরের আবাসন পুনর্গঠিত করেন।[১২] প্রাথমিক শিক্ষার পর তিনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এসএমপি নেগেরি ১ সুরাকার্তায় শিক্ষা গ্রহণ করেন।[১৩] তিনি এসএমএ নেগেরি ১ সুরাকার্তায় তার শিক্ষা গ্রহণ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় তিনি অকৃতকার্য হন এবং এসএমএ নেগেরি ৬ সুরাকার্তায় পড়াশোনার জন্য যান।[১৪] রাজনৈতিক জীবনসুরাকার্তার মেয়রসুরাকার্তার মেয়রের পদে লড়বার সময় তার সম্পদ ও আসবাবপত্রের ব্যবসায়ী হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠে; একটি একাডেমিক পেপার দাবি করে যে তার নেতৃত্বের ধরন সফল হয়েছিল কারণ এখানে জনসাধারণের সাথে মজবুত সম্পর্ক গড়ে তোলা হয় যার ফলে তার প্রতি মানুষের বিশ্বাস জন্মায়।[১৫] ব্যবসায়ী হিসেবে তার ভ্রমণ করা ইউরোপীয় শহরের উন্নয়ন কাঠামো তিনি তার নিজ শহর সুরাকার্তায় গ্রহণ করেন।[১৬] সুরাকার্তার মেয়র হিসেবে তার সাত বছরের কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে।:[১৭]
তার সমর্থকরা তার নেতৃত্বে সুরাকার্তার উন্নয়ন এবং "সোলোঃ জাভার আত্মা" স্লোগানকে নির্দেশ করে থাকে। দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে উচ্ছিষ্ট বস্তুর ব্যবসায়ীদের তিনি বানজারসারি উদ্যানে স্থানান্তর করেন। এর মাধ্যমে উন্মুক্ত স্থানগুলো পুনরুজ্জীবিত করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামাজিক কাজে জড়িত হওয়ার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন॥ স্থানীয় টিভিতে নিয়মিতভাবে আসার মাধ্যমে তিনি স্থানীয় জনতার সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেন। তার উদ্যোগে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে সুরাকার্তা অর্গানাইজেশন অফ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সিটিসের সদস্য হয় এবং ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে সংগঠনের সম্মেলনের আয়োজক শহর হিসেবে নির্বাচিত হয়। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে সুরাকার্তা বিশ্ব সঙ্গীত উৎসবের আয়োজক হয় যা ভাসতেনবুর্গ দুর্গ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে এই উৎসব মানকুনেগারান প্রাসাদ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়। তার ব্যক্তিগত কর্মপ্রণালীর মধ্যে "করতে পারি" স্লোগান জনপ্রিয় হয়।[১৫] ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ক্রিসমাসের কিছু আগে সুরাকার্তার মেয়র হিসেবে তিনি একটি ঘটনায় ব্যক্তিগতভাবে জড়িয়ে পড়েন; এসময় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুত কোম্পানির কাছে সুরাকার্তার মিউনিসিপালিটির প্রায় ১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের বিল বকেয়া ছিল। কোম্পানির নীতি অনুযায়ী বাকি বিল সংগ্রহের শৃঙ্খলার জন্য ক্রিসমাসের কিছু আগে সুরাকার্তার রাস্তার বাতি বন্ধ করে দেয়। মিউনিসিপালিটি দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা করে কিন্তু প্রতিবাদ করে বলে যে বিদ্যুত কোম্পানির উচিত ছিল এধরনের কাজের আগে জনসাধারণের স্বার্থের দিকে লক্ষ্য রাখা। এই যুক্তি জোরদার করার জন্য জোকো উইদোদো ব্যক্তিগতভাবে বিদ্যুত কোম্পানির স্থানীয় অফিসে গিয়ে ১০০ মূল্যের নোট এবং কয়েন আকারে বিল পরিশোধ করে।[১৯] ইন্দোনেশিয়ার ম্যাগজিন টেম্পু ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তাকে টেম্পু'স লিডার্স অফ চয়েস মনোনীত করে। তিনি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে রিপাবলিকা পত্রিকা থেকেচাঙ্গেমাকের্স এওয়ার্ড লাভ করেন। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে দল কর্তৃক মনোনীত হওয়ার পূর্বে জাকার্তার গভর্নর পদের নির্বাচনের জন্য তার নাম উঠে আসে।.[১৫] জাকার্তার গভর্নরজাকার্তার গভর্নর থাকাকালীন সময়ে জোকো ব্লুসুকান নামক নীতি অনুসরণ করেন। এর মাধ্যমে নিয়মিতভাবে জাকার্তাব্যপী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বিশেষত দরিদ্র এলাকায় ভ্রমণ করতেন। তার উপদেষ্টাদের ভেতরের মহলে এফএক্স হাদি 'রুদি' রুদইয়াতমু, সুমারতুনু হাদিনুতু ও আনগিত নুগরুহু ছিলেন এমনটা বলা হয়। তিনি সুরাকার্তার মেয়র থাকার সময় তারা তার সহকর্মী ছিলেন।[২০] গভর্নর হিসেবে নীতিব্লুসুকানজোকো উইদোদো নিয়মিতভাবে জাকার্তার বিভিন্ন দরিদ্র এলাকা সফর করতেন। এসকল সফরে তাকে সাধারণ পোষাকে দেখা যায়। তিনি এসময় বিভিন্ন বাজার ও সরু গলিতে হেটে বাসিন্দাদের বিভিন্ন সমস্যা যেমন খাদ্যের মূল্য, আবাসন সমস্যা, স্থানীয় বন্যা, যোগাযোগ ব্যবস্থা এসব বিষয়ে খোজ নিতেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে যে তার এসকল কর্মপ্রণালী জাকার্তা ও ইন্দোনেশিয়ার অনত্র তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেছে।[২১] লেলাং জাবাতান২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল ও জুন মাসে জোকো লেলাং জাবাতান নামক আমলাতান্ত্রিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করেন আক্ষরিকভাবে যার অর্থ অফিস পদের নিলাম। এই প্রক্রিয়া ইতিপূর্বে ইন্দোনেশিয়ায় চালু ছিল না। এর মাধ্যমে প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী যোগ্যতা পূরণ ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে নির্দিষ্ট পদ লাভের সুযোগ পেত। এই পরীক্ষার ফলাফল স্বচ্ছভাবে ঘোষণা করা হত এবং প্রাদেশিক সরকার কর্মচারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী পদ প্রদান করত।[২২] স্বাস্থ্য সেবা কর্মসূচি২০১২ খ্রিষ্টাব্দে দায়িত্ব গ্রহণের কিছুকাল পর জাকার্তায় তিনি হেলদি জাকার্তা কার্ড (কারতু জাকার্তা সেহাত) এর ভিত্তিতে স্বাস্থ্য সেবা কর্মসূচি চালু করেন। এই কার্যক্রম জনপ্রিয় হলেও প্রয়োগের সময় সমস্যা বৃদ্ধি পায়।[২৩] প্রথম কয়েক মাসে হাসপাতালগুলো থেকে স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা ৭০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।[২৪] এই কর্মসূচিতে ইন্সুরেন্স অন্তর্ভুক্ত ছিল যা একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্সুরেন্স কোম্পানি কর্তৃক প্রদান করা হত।[২৫] এর প্রয়োগের বিস্তারিত নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয় এবং সেবার জন্য দীর্ঘ সারির কারণে অসন্তুষ্টি বৃদ্ধি পায়। এই দীর্ঘ সারি ফলে মধ্যস্বত্ত্বভোগী শ্রেণীর উদ্ভব হয়। এরা প্রায় ১,৫০,০০০ ইন্দোনেশীয় রুপীয়াহ পর্যন্ত অর্থের বিনিময়ে কাজ করত।[২৬] এসকল সমস্যার কারণে জাকার্তার আঞ্চলিক পার্লামেন্টে তার বিপক্ষে সমালোচনা হয়। বলা হয় যে তিনি জনপ্রিয়তাবাদি ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছেন। তবে জোকো তার কার্যক্রমের পক্ষে অবস্থান নেন। শিক্ষা কর্মসূচি২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ১ ডিসেম্বর জোকো "স্মার্ট জাকার্তা কার্ড" চালু করেন। জাকার্তার দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সাহায্য করা এর উদ্দেশ্য ছিল। এর কার্ডে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হত এবং শিক্ষার্থীদের বই, ইউনিফর্ম ইত্যাদি শিক্ষা উপকরণের জন্য প্রয়োজনীয় এই অর্থ এটিএম থেকে উত্তোলন করা যেত। কার্ডের ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করা হত। শিক্ষার কাজ ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে কার্ড ব্যবহার করার অনুমতি ছিল না।[২৭] গণপরিবহন২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১০ অক্টোবর জোকো উইদোদো জাকার্তার মেট্রো নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। ইতিপূর্বে এই কাজ এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।[২৮] সে বছরের ১৬ অক্টোবর তিনি জাকার্তা মনোরেলের গ্রীন লাইনের নির্মাণকাজ পুনরায় চালু করেন।[২৯] অর্থনৈতিক সংস্কারজোকো উইদোদো দায়িত্ব গ্রহণের পর কর এবং জাকার্তার প্রাদেশিক বাজেট ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ৪১ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ৭২ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ হয়।[৩০][৩১] স্বচ্ছতাজোকো উইদোদো ও তার পূর্বের গভর্নর বাসুকি দুজনেই তাদের মাসিক বেতন এবং প্রাদেশিক বাজেট জনসাধারণের সম্মুখে পেশ করতেন।[৩২][৩৩] এছাড়াও তারা স্বচ্ছতার জন্য কিছু কার্যক্রম চালু করেন যেমন অনলাইন ট্যাক্স, ই-বাজেট, ই-কেনাকেটা ও নগদ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম।[৩২] তাদের সকল বৈঠক রেকর্ড করে সেগুলো ইউটিউবে আপলোড করা হত।[৩৪] হকার ও প্রথাগত বাজারের পুনর্গঠনজোকো উইদোদো পাসার মিঙ্গু ও পাসার তানাহ আবাং এর হকারদেরকে নতুন ভবনে স্থানান্তর করেন। তাদের কারণে ট্রাফিক জ্যাম হচ্ছিল বলে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।[৩৫] ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পাঁচটি এবং ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে চারটি প্রথাগত বাজার তৈরী ও সংস্কার করেন।[৩৬][৩৭] এসকল বাজারের বিক্রেতাদেরকে উপর ভাড়া ধার্য করা হয়নি তবে তাদেরকে বিক্রয়ের স্থান রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় এবং এগুলো তারা বিক্রি করতে পারে না। বিক্রেতাদের শুধু রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুত ও পানির মূল্য দিতে হয়।[৩৮] বন্যা নিয়ন্ত্রণ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ড্রেজিং ও জলাধার বিষয়ক কার্যক্রম চালু করা হয়। এসকল কার্যক্রমের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তিনটি হল প্লুইট জলাধার, রিয়া রিও জলাধার এবং পেসাঙ্গারাহান নদী। জলাধারের আশেপাশের বসতি স্থানান্তর এসকল কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৩৯] বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার পর ড্রেজিং শুরু হয়। নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট একে সফল বলে প্রশংসা করেন।[৪০] এসকল কার্যক্রমের ফলে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে বন্যর প্রকোপ কমে আসে।[৪১] রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীমেঘবতী সুকর্ণপুত্রী জোকো উইদোদোকে তার দলের জন্য রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেন। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের দ্রুত গণনার ফলাফল পাওয়ার পর ৯ জুলাই জোকো উইদোদোকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তার প্রতিপক্ষ প্রাবুয়ু সুবিয়ান্তোও নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন যার ফলে জনসাধারণের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব জন্ম নেয়[৪২] ২২ জুলাই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পূর্বে প্রাবুয়ু নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।[৪৩] কমিশন জোকো উইদোদোকে ৫৩.১৫% ভোট পেয়েছেন বলে ঘোষণা করে। অন্যদিকে প্রাবুয়ু পান ৪৮.৮৫% ভোট[৪৪] তবে প্রবুয়ুর সমর্থকরা এই ফল মানতে রাজি হননি।[৪৫] বিজয়ের পর জোকো উইদোদো বলেন যে কর্তৃত্ববাদী ও দুর্নীতিগ্রস্থ শাসনের অধীনে বড় হওয়ার কারণে তিনি কখনো ভাবেননি যে নিম্ন শ্রেণীর একজন রাষ্ট্রপতি হতে পারবে। নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদ প্রকাশ করে যে "এখন এটি প্রায় আমেরিকার নয় কি? আমেরিকান স্বপ্ন আছে, এবং এখানে আমরা ইন্দোনেশীয় স্বপ্ন পাচ্ছি"।[৪৬] জোকো উইদোদো সামরিক বা অভিজাত শ্রেণীর বাইরে থেকে আগত প্রথম ইন্দোনেশীয় রাষ্ট্রপতি। রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকার সালিম সাইদ তার সম্পর্কে বলেন "এমন কেউ যে আমাদের প্রতিবেশী, যে রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং রাষ্ট্রপতি পদের জন্য লড়েছে".[৪৬] ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতিঅর্থনৈতিক সক্ষমতা২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম চতুর্ভাগে জিডিপি ৪.৯২% বৃদ্ধি পায়।[৪৭] দ্বিতীয় চতুর্ভাগে এই বৃদ্ধি ৪.৬% হয় যা ২০০৯ এর পর সর্বনিম্ন।[৪৮] সবকিছু ৬% এর নিচে ছিল এবং নবাগতরা ইন্দোনেশিয়ার শ্রমবাজারে যুক্ত হতে পারছিল না।[৪৯] রুপিয়াহর মূল্য কমে যায়। মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এর মূল্য হ্রাস পেয়ে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে ১৪,০০০ রুপিয়াহ হয় যা বিগত ১৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।[৫০] একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এই মূল্য ১৪৭৯৭ রুপিয়াহ হয়েছিল।[৫১] ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭.২৬%। এই হার মে (৭.১৫%) এবং তার পূর্বের বছরের জুন মাসের (৬.৭%) চেয়ে বেশি।[৫২] মাদক অপরাধ ও মৃত্যুদন্ডের নীতিমাদক পাচার ও দুর্নীতির ক্ষেত্রে ইন্দোনেশীয় আইনে মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে।[৫৩][৫৪] জোকো উইদোদো দায়িত্বগ্রহণের পর ঘোষণা করেন যে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মাদক পাচারকারীদের কোনো প্রকার ক্ষমা প্রদর্শন করা হবে না।[৫৫] বিচারিক আদালতের আদেশের পর রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে ইন্দোনেশীয়ায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।[৫৬] মৃত্যুদন্ড মওকুফের জন্য আসা আবেদন খারিজের জন্য রাষ্ট্রপতিকে এ সংক্রান্ত দলিল পড়তে হয় না।[৫৭] জোকো উইদোদো যুক্তি দেখান যে ইন্দোনেশিয়া বর্তমানে মাদক সংক্রান্ত ব্যাপারে জরুরি অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেন যে ১.২ মিলিয়ন মাদকগ্রহণকারীকে পুনর্বাসন করা সম্ভব না এবং প্রতি বছর তাদের ৫০ জন মারা যাচ্ছে।[৫৫] তবে একজন সাংবাদিক বলেছেন যে এই পরিসংখ্যান সঠিক না।[৫৮] ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে মার্কো আর্চার কারদোসো মোরেইরা নামে ব্রাজিলের এক নাগরিকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়।[৫৯][৬০] তার সাথে একজন ডাচ নাগরিকের মৃত্যুদন্ডও কার্যকর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ার আদালত মৃত্যুদন্ড দেয়। ব্রাজিল ও নেদারল্যান্ড তাদের নাগরিকের মৃত্যুদন্ডের প্রতিবাদ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নেয়।[৬১] ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক না হওয়ার ফলে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে মাইয়ুরান সুকুমারান ও এন্ড্রু চান নামক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দুই অস্ট্রেলীয় নাগরিকের রিভিউ আবেদন ইন্দোনেশিয়ার সাংবিধানিক আদালত খারিজ করে দেয়।[৬২] ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের মার্চে অস্ট্রেলিয়া বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে উত্থাপনের প্রস্তাব দেয়।[৬৩] ২৯ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে। এর প্রতিবাদ হিসেবে ইন্দোনেশিয়া তাৎক্ষনিকভাবে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নেয়।[৬৪] ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ মে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে ইন্দোনেশিয়াকে দেয়া বৈদেশিক সাহায্য কমিয়ে ৬০৫.৩ মিলয়ন মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ৩৬৬.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করা হয়।[৬৫] সাংবিধানিক আদালতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জিমলি আশিদ্দিকি বলেন যে এই দুই অস্ট্রেলীয় নাগরিকের মৃত্যুদন্ডের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ব্যক্তিগতভাবে চাপ এসেছিল।[৬৬] তবে জোকো উইদোদো ফিলিপাইনের নাগরিক মেরি জেন ভেলোসোকে শেষ মুহূর্তে দন্ড মওকুফ করেছিলেন। ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি একুইনার সাথে আসিয়ান বৈঠকের সময় একুইনা দন্ড মওকুফের আবেদন করেছিলেন।[৬৭] এক ফরাসি নাগরিকের মৃত্যুদন্ডের প্রসঙ্গে ফরাসি রাষ্ট্রদূত বলেন যে এই দন্ড কার্যকর হলে দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়বে। তিনি এও বলেন যে ফ্রান্স ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুদন্ড বিলোপ করেছেন এবং তারা সর্বাবস্থায় মৃত্যুদন্ডের বিপক্ষে।[৬৮] ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ এপ্রিল আটলাউইর আপিল শুনানি বাকি থাকায় তাকে মৃত্যুদন্ড থেকে সরিয়ে আনা হয়।[৬৯][৭০] জোকো উইদোদোর মৃত্যুদন্ড নিয়ে অবস্থানের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা হয়। বলা হয় যে এর ফলে দন্ডপ্রাপ্তদের সাথে ইন্দোনেশিয়ার বৈদেশিক সম্পর্কের অবনতি হবে।[৭১] এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মৃত্যুদন্ডে সঠিক প্রক্রিয়া ও মানবাধিকার সুরক্ষার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করে।[৭২] তবে জোকো উইদোদো বিদেশে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ইন্দোনেশীয় নাগরিকদের পক্ষে অবস্থান নেন।[৭৩] ইন্দোনেশিয়ায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হিসেবে ১৩০ জনের মত রয়েছে।[৭৪] নিজ রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্কবিভিন্ন কর্মপ্রণালীর দুর্বলতার কারণে জোকো উইদোদো তার নিজ দলের মধ্যে সমালোচনার মুখে পড়ে। একজন আইনপ্রণেতা তার অভিশংসনের দাবি জানান।[৭৫] দলীয় কংগ্রেস চলার সময় ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৯ এপ্রিল দলের প্রধান ও প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মেঘবতী সুকর্ণপুত্রী তাকে কার্যনির্বাহক বলে অবিহিত করেন। মেঘবতী উল্লেখ করেন যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রণালী হল যে একজন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত হন যার অর্থ জোকোর মনোনয়ন তার দলের মনোনয়ন ছিল। এ কারণে রাষ্ট্রপতি তার দলের রাজনৈতিক নীতি অনুসরণ করবেন এটাই স্বাভাবিক।[৭৬] "দলের বর্ধিত হাত হিসেবে আপনি এর কার্যনির্বাহক। যদি আপনি দলের কার্যনির্বাহক হতে না চান তবে সরে দাঁড়ান!"[৭৭] জ্বালানি ভর্তুকি হ্রাস নীতিজোকো উইদোদো দায়িত্বগ্রহণের পূর্বে চেয়েছিলেন যাতে তার পূর্বসূরি সুসিলো বামবাং ইয়ুধনোকে জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধির দায়িত্ব নেন।[৭৮][৭৯] ইতিপূর্বে ইয়ুধনোর ভর্তুকি হ্রাসের কারণে গণ অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।[৭৮] ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারিতে জোকো জ্বালানির উপর ভর্তুকি হ্রাসের পদক্ষেপ নেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তরফ থেকে এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানো হয়।[৮০] সরকার ডিজেলের উপর লিটার প্রতি ১,০০০ রুপিয়াহ (০.০৮ মার্কিন ডলার) ভর্তুকি প্রদান করে, তবে গ্যাসোলিনের উপর ভর্তুকি হ্রাস করা হয়।[৮১] এই পদক্ষেপের দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়। তবে জোকো উইদোদো বলেন যে অবকাঠামো, শিক্ষা, ও স্বাস্থ্য সেবা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য এই পদক্ষেপ দরকার ছিল।[৮২] তবে তিনি তার প্রতিশ্রুত অবকাঠামো কর্মসূচিতে সফল হননি।[৮৩] এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "কেউ কেউ বলে যে যদি আমি জ্বালানি ভর্তুকি হ্রাস করি তবে আমি অজনপ্রিয় হব। আমি বলি আমি জনপ্রিয়তা চাই না।"[৮৪] বৈদেশিক নীতিইতিপূর্বে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ইয়ুধনোর সময় পররাষ্ট্র নীতি ছিল, "হাজার বন্ধু এবং শূণ্য শত্রু"।[৮৫] জোকো উইদোদো তিন দফা নীতি প্রণয়ন করেন যার মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকদের সুরক্ষা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক কূটনীতি বৃদ্ধি।[৮৬] জোকো উইদোদোর মতানুযায়ী ইন্দোনেশিয়ার সার্বভৌমত্বকে উপহাস করে প্রতিদিন ৫,০০০ এর বেশি জাহাজ এর জলপথ ব্যবহার করছে যার কারণে বার্ষিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয় এবং জাকার্তা এই অবস্থা মেনে নিতে পারে না।[৮৭] "প্রতিদিন প্রায় ৫,৪০০ বিদেশি মাছ ধরার জাহাজ আমাদের সমুদ্রে আসে," তিনি বলেন। "তাদের প্রায় ৯০% বেআইনিভাবে কাজ করে"।."[৮৮] এছাড়াও তিনি বিদেশে মাদক পাচারের দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করেছেন।[৮৯] মন্ত্রিপরিষদে রদবদল২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১২ আগস্ট জোকো উইদোদো তার মন্ত্রিপরিষদে রদবদল ঘোষণা করেন[৯০]
পুরস্কার ও সম্মাননা
২০০৮: টেম্পু ম্যাগাজিন কর্তৃক ২০০৮ এর ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ দশ মেয়রের অন্যতম ২০১২: "অপরাধ প্রবণ শহর থেকে শিল্প, সংস্কৃতি ও পর্যটক আকর্ষণের শহরে রূপান্তর" কৃতিত্বে ২০১২ এর বিশ্ব মেয়র পুরস্কারের জন্য তৃতীয় স্থান। ২০১৩: ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন কর্তৃক ২০১৩ এর নেতৃত্বাস্থানীয় বিশ্ব চিন্তাবিদ্দের অন্যতম। সে বছরের ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনভিত্তিক দ্য সিটি মেয়রস ফাউন্ডেশন কর্তৃক গ্লোবাল মেয়র অফ দ্য মান্থ হিসেবে মনোনোয়ন লাভ করেন[৯৩] ২০১৪: ফরচুন ম্যাগাজিন কর্তৃক বিশ্বের ৫০ জন বড় নেতার তালিকায় স্থান[৯৪] ব্যক্তিগত জীবনদি ইকোনমিস্ট কর্তৃক পরিবেশিত সংবাদ অনুযায়ী জোকো উইদোদো উচ্চশব্দের রক সঙ্গীত পছন্দ করেন এবং তার ভারী মেটাল ব্যান্ড মেটালিকার রবার্ট ট্রুজিলোর স্বাক্ষর করা একটি বেস গিটার একসময় তার কাছে ছিল।[৯৫] তিনি একজন মেটালিকা, ল্যাম্ব অব গড, লেড জেপেলিন ও নাপাম ডেথের ভক্ত। নাপাম ডেথ তাদের ফেসবুক ফ্যান পেজে জোকো উইদোদোর প্রশংসা করেছে।[৯৬] তবে বালি নাইন ও লিন্ডসে স্যান্ডিফোর্ড মামলার পর তার প্রতি ব্যান্ডের সমালোচনা হয়। তাদের মধ্যে টনি ইয়োমিও ছিলেন। ক্ষমা ঘোষণার জন্য তারা অনুরোধ করেছিলেন। তবে তাদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়।[৯৭] জাকার্তার গভর্নর থাকাকালীন সময়ে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ২ নভেম্বর সুরাকার্তার একটি রক উৎসবে তা সাধারণ পোষাকে দেখা যায়। এই উৎসবে এটি তার দ্বিতীয় আগমন। এর পূর্বে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এই রক উৎসবে প্রথমবার এসেছিলেন।[৯৮] পরিবারজোকো উইদোদো তার বাবা নোতো মিহারদজো ও মা সুদজিয়াতমি নোতোমিহারদজোর জ্যেষ্ঠ সন্তান। তার তিনজন ছোট বোন রয়েছেন। [৯৯] জোকো ও তার স্ত্রীর ইরিয়ানার তিন সন্তান রয়েছেন। তারা হলেন জিবরান রাকাবুমিং রাকা, কাহিয়াং আয়ু ও কাইসাং পাঙ্গারেপ। চলচ্চিত্রে উপস্থাপন২০১৩ এর জুন মাসে জোকো উইদোদোর শৈশব ও যৌবনকাল নিয়ে একটি চলচ্চিত্র প্রচারিত হয়।[১০০] জোকো উইদোদো চলচ্চিত্রের কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলে বলেন যে তার জীবন সাধারণ ছিল এবং চলচ্চিত্রে তুলে ধরার মত উল্লেখযোগ্য ছিল না।[১০১] তথ্যসূত্র
আরও পড়ুনউইকিমিডিয়া কমন্সে জোকো উইদোদো সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। ১. Majeed, Rushda (2012). "The City With a Short Fuse." ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে Foreign Policy. September. (ইংরেজি ভাষায়)
|