ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী
ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (জন্ম: অজানা, মৃত্যু: ১৯৯৬) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [১] জন্ম ও শিক্ষাজীবনফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর জন্ম সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার রণকেলী-বারকোট গ্রামে। তার বাবার নাম ওসমান আলী চৌধুরী এবং মায়ের নাম জামিলুন নেছা। তার স্ত্রীর নাম সৈয়দা হেলেনা বেগম। তাদের তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। কর্মজীবনফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী চাকরি করতেন ইপিআরে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন চট্টগ্রাম ইপিআরের ১৪ নম্বর উইংয়ে। এর অবস্থান ছিল হালিশহরে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধযুদ্ধ করেন। পরে মুক্তিবাহিনীর ১ নম্বর সেক্টরের ঋষিমুখ ও শ্রীনগর সাবসেক্টরে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকাফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের অন্তর্গত চাঁদগাজী এলাকায় বিলোনিয়ার অংশে তিন দিকে ভারত। সরু এক এলাকা। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ অবস্থান নিয়েছিল চাঁদগাজীতে। সেখানে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি দল। একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। চাঁদগাজীতে ২৪ মে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম যুদ্ধ হয়। তারপর খণ্ড খণ্ডভাবে ২৪ জুন পর্যন্ত সেই যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। মে মাসের মাঝামাঝি এক দল পাকিস্তানি সেনা উপস্থিত হয় চাঁদগাজীতে। তারা সেখানে ঘাঁটি গাড়ে। ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা ২৪ মে সেখানে আক্রমণ করে। শুরুতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ তীব্রভাবে প্রতিরোধ করে। ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী তাতে দমে না গিয়ে সহযোদ্ধাদের নিয়ে বীরত্বের সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণ প্রতিহত করেন। তার সাহসিকতায় হতবুদ্ধি ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনারা এবং নিহত ও আহতদের নিয়ে পালিয়ে যায়। সেদিন যুদ্ধে ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী যথেষ্ট রণকৌশল ও সাহস প্রদর্শন করেন। মূলত তার রণকৌশল ও সাহসিকতার কারণেই পাকিস্তানি সেনারা হতোদ্যম হয়ে পড়ে। এরপর কয়েক দিন সেখানে পরিস্থিতি শান্ত ছিল। ৬ জুন একদল পাকিস্তানি সেনা চাঁদগাজীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানে পাল্টা আক্রমণ চালায়। সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে প্রায় দুই কোম্পানি পাকিস্তানি সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ করে। ফখর উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সহযোদ্ধাদের নিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করেন। পরে আরও কয়েক দিন যুদ্ধ হয়। শেষে ১৯ জুন পাকিস্তানি সেনারা হেলিকপ্টার ও স্থলবাহিনী দিয়ে যৌথ আক্রমণ করে। তারা হেলিকপ্টারের সাহায্যে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের পেছনে সেনা নামায়। তখন পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে পড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা দ্রুত নিরাপদ অবস্থানে চলে যান। চাঁদগাজী পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। পুরস্কার ও সম্মাননাতথ্যসূত্র
বহি:সংযোগ |