হায়াৎ মামুদ
হায়াৎ মাহমুদ (জন্ম: ২ জুলাই ১৯৩৯) বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান লেখক। তিনি একজন আধুনিক কবি, প্রবন্ধকার , অনুবাদক ও অধ্যাপক। মৃত্যুচিন্তা রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য জটিলতা তার বিখ্যাত গ্রন্থ যা ১৯৬০-এর দশকে প্রকাশিত হয়ে সাড়া জাগিয়েছিল। তিনি শিশুদের জন্য অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার অনূদিত মাক্সিম গোর্কি বিরচিত চড়ুইছানা সকলমহলে উচ্চ প্রশংসা লাভ করে।[১] জীবনহায়াৎ মামুদ ২ জুলাই ১৯৩৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মৌড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ছেলেবেলা কেটেছে পশ্চিমবঙ্গে। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ শাসনের অবসানে ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর তারা পশ্চিবঙ্গেই থেকে গিয়েছিলেন। তখন পড়তেন খাজুরদহ এম.ই. স্কুলে। কিন্তু ১৯৫০-এর হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫১ সালে তিনি পিতার সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৫২ সালে পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাংলাদেশে চলে আসেন। তার বাবা মুহম্মদ শমসের আলী এবং মা আমেনা খাতুন। হায়াৎ মামুদ ঢাকার সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল থেকে ১৯৫৬ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৫৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে পিছিয়ে পড়তে হয়। তিনি ১৯৫৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পাস করেন। তৎকালীন কায়েদে আজম কলেজ (বর্তমানে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন চাকুরি করেন বাংলা একাডেমিতে । ১৯৭৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত দীর্ঘকাল তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হল- স্বগত সংলাপ, প্রেম অপ্রেম নিয়ে বেঁচে আছি, রবীন্দ্রনাথ : কিশোর জীবনী, নজরুল ইসলাম : কিশোর জীবনী, প্রতিভার খেলা, নজরুল, বাঙালি বলিয়া লজ্জা নাই, বাংলা লেখার নিয়মকানুন ইত্যাদি। সাহিত্যকৃতিহাসান আজিজুল হককে নিয়ে রচিত তার জীবনীগ্রন্থ উন্মোচিত হাসান একটি প্রামাণিক গ্রন্থ। তিনি রুশ ভাষা থেকে বহু গল্প বাংলায় অনুবাদ করেছেন। শিশু-কিশোরদের জন্য জীবনীগ্রন্থ রচনা ছিল তার প্রিয় বিষয়। গ্রন্থসমূহঅনুবাদ
অন্যান্য
সম্মাননাশিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। জীবনব্যাপী শিশুসাহিত্য রচনার জন্য তাকে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৪১৮) দেওয়া হয়।[৩] ২০১৬ সালে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক লাভ করেন।[৪] ২০১৭ সালে তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন । ২০১৭ সালে কবীর চৌধুরী শিশু সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।[৫] তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ |