অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ড
অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ড ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি আমেরিকান অ্যাকশন চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন জন মুর এবং জন ম্যাকক্লেইন নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ব্রুস উইলিস।জন ম্যাকক্লেইন চরিত্রটি নেওয়া হয়েছে রডেরিক থোর্পের “নাথিং লাস্টস ফরইভার” বই থেকে। এটি ডাই হার্ড চলচ্চিত্র সিরিজের পঞ্চম চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটিতে জন ম্যাকক্লেইন প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যিনি তার ছেলে জ্যাককে জেল থেকে মুক্ত করতে রাশিয়া ভ্রমণ করেন। কিন্তু তার একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ষরযন্ত্রের মধ্যে পরে যায়। ডাই হার্ড সিরিজের প্রথম চলচ্চিত্র ডাই হার্ড মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৮ সালে। এরপর একে একে মুক্তি পায় ডাই হার্ড ২, ডাই হার্ড ৩ ও চতুর্থ চলচ্চিত্রটি হল লিভ ফ্রি অর ডাই হার্ড (২০০৭)। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে সিরিজের পঞ্চম চলচ্চিতের জন্য সেপ্টেম্বর, ২০১১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জন মুরকে পরিচালক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এপ্রিল ২০১২ সালে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে প্রাথমিকভাবে অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ড চলচ্চিত্ররে শ্যূটিং শুরু হয়। ৩১ জানুয়ারি, ২০১৩ সালে লস অ্যাঞ্জেলসে অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ডের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়[২] ও পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান টেরিটোরিতে ৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছিল। চলচ্চিত্রটি ১৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় মুক্তি পায়। কাহিনীরাশিয়ার মস্কোয় ভিক্টর চ্যাগেরিন নামে একজন দূনির্তীগ্রস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ইউরি কামারভ নামে এক সাবেক ধনকুবের ও রাজনৈতিক বন্দিকে যথপোযুক্ত বিচার ব্যতীত দোষী সাবস্থ করার পরিকল্পনা করে। কারণ চ্যাগেরিন বিশ্বাস করত ইউরির কাছে এমন কিছু নথিপত্র আছে যা তাকে বিপদ্জনক পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে। অন্য একটি ভিন্ন ঘটনায় জ্যাক ম্যাকক্লেইন গ্রেফতার হন ও তিনি তার খুনের দায়ভার ইউরি কামারভের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। জন ম্যাকক্লেইনের (ব্রুস উইলিস) সাথে তার ছেলে জ্যাকের কয়েক বছর ধরে যোগাযোগ নেই। ম্যাকক্লেইন তার ছেলের অবস্থায় জানার পর তিনি তার ছেলেকে সাহায্য করার জন্য রাশিয়া ভ্রমণ করেন। এদিকে জ্যাক ও কামারভকে বিচারের জন্য একটি আদালতে আনা হয়। যখন ম্যাকক্লেইন আদালতের বাইরে উপস্থিত হন তখন চ্যাগেরিনের লোকেরা আদালতের বাইরে বিস্ফোরণ ঘটায় ও জ্যাক এবং কামারভ আদালত থেকে পালিয়ে যায়। আদালতের বাইরে জ্যাকের সাথে ম্যাকক্লেইনের সাক্ষাত হয় কিন্তু চ্যাগেরিনের লোকেরা মস্কোর রাস্তায় তাদের পিছু ধাওয়া করে। চ্যাগেরিনের পরিকল্পনা ছিল আদালত থেকে কেমারভকে আদালত থেকে বন্দি করে নথি উদ্ধার করা। ম্যাকক্লেইন, জ্যাক ও কামারভ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পালিয়ে একটি সেফ হাউজে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় ম্যাকক্লেইন জানতে পারে জ্যাক সিআইএর আন্ডার কাভার এজেন্ট হিসেবে তিন বছর যাবত কাজ করছে। জ্যাকের সহকর্মী কলিন্স কামারভের কাছে নথির কোথায় আছে তা জানতে চান যাতে করে এই নথির সাহায্যে সিআইএ চ্যাগেরিনকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারে। এরপরই সেফ হাউজে চ্যাগেরিনের লোকেরা আক্রমণ করে ও কলিন্স গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ম্যাকক্লেইন, জ্যাক ও কামারভ পুনরায় ভারী গুলিবর্ষণের হাত থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তারপর তার শহরের একটি হোটেলে যায় যেখানে গোপন ভল্টের একটি চাবি রাখা আছে ও ভল্টে যে নথিপত্র আছে তা উদ্ধারের জন্য। কিন্তু হোটেলে কামারভের মেয়ে এরিনা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, কামারভকে বন্দি হিসেবে নিয়ে জ্যাক ও ম্যাকক্লেইনকে বেঁধে রাখে। কিন্তু জ্যাক ও ম্যাকক্লেইন মিল মাই ২৪ হেলিকাপ্টারের গুলিবর্ষণ থেকে রক্ষা পান। একই রাতে তারা দুজন দুটি গাড়ি চুরি করে প্রচুর গুলাবারুদ নিয়ে চেরনোবিল, ইউক্রেনের দিকে রওনা হয় যেখানে গোপন ভল্টে নথিপত্র রাখা আছে। কিন্তু তারা গিয়ে দেখতে পারে সেখানে আসলে কোন নথিপত্র নেই পরীবর্তে একটি বড় ইউরেনিয়াম আস্ত্রের গুদাম রয়েছে। কামারভ, চ্যাগেরিনের ভাড়াটে আলিককে হত্যা করে ও চ্যাগেরিনকে ফোন করে। তিনি বলেন, আইরিন ও সে মিলে প্রথম থেকেই এই পরিকল্পনা করেছিরেন। এখানে কোন নথিপত্র নেই শুধুই অস্ত্রের গুদাম ও এটা তারই চাল ছিল। এরপর কামারভের এক সহকারী চ্যাগেরিনকে হত্যা করে। জ্যাক ও ম্যাকক্লেইন ভিতরে প্রবেশ করে কামারভকে বন্দি করে। আইরিন তার পিতাকে বাঁচাতে একজন ভাড়াটে লোক নিয়ে চলে আসে ও তারা দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। জ্যাক কামারভকে ধরতে তার পিছু নেয় ও ম্যাকক্লেইন আইরিনের পিছু নেয। আইরিন একটি হেলিকাপ্টার নিয়ে তার বাবাকে সাহায্য করার জন্য আসতে থাকে কিন্তু ম্যাকক্লেইন হেলিকাপ্টার থেকে একটি ট্রাকের সাহায্যে পেছনের অংশ দিয়ে অর্ধেক বেরিয়ে আসলে আইরিন হেলিকাপ্টার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। এদিকে কামারভ জ্যাকের সাথে মারামারির একপর্যয়ে হেলিকাপ্টারের পাখার উপর পরে মারা যায়। তার হত্যার প্রতিশোধ নিতে আইরিন হেলিকাপ্টার নিয়ে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে হেলিকাপ্টার বিষ্ফোরিত হয় কিন্তু জ্যাক ও ম্যাকক্লেইন রকাষা পান। শ্রেষ্ঠাংশে
সাউন্ডট্রেক
মার্কো বাল্টরামি অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ড এর গানের অ্যালবামের কম্পোজ করেন। তিনি এর আগে সিরিজটির চতুর্থ চলচ্চিত্র লিভ ফ্রি অর ডাই হার্ডের (২০০৭) গানের অ্যালবামের কম্পোজ করেছিলেন। সাউন্ডট্রেক অ্যালবামটি সনি ক্লাসিক দ্বারা ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সালে মুক্তি পায়।[৩] গানের তালিকাসকল গানের সুরকার মার্কো বাল্টরামি।
মুক্তি৩১ জানুয়ারি, ২০১৩ সালে ২০ সেঞ্চুরি ফক্স ডাই হার্ড এর ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে ডাই হার্ড (১৯৮৮) থেকে কিছু অংশ প্রদশন করে। এর পরপরই অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ডের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বাণিজ্যিক মুক্তি উপলক্ষে দুটি ভিন্ন ভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন কার হয়। একটি অনুষ্ঠিত হয় ৪ ফেব্রুয়ারি, জার্মানির বার্লিনে এবং অপরটি ৭ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের লন্ডনে।[৫][৬] অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ড বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মুক্তি পায় ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সালে ইন্দোনেশিয়ায়। এরপর পূর্ব ও র্পর্ব-দক্ষিণ এশিয়ান টেরিটোরিতে ৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি দেওয়া হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মোট ২,৩২৮ টি প্রেক্ষাগৃহে রাতে প্রদর্শনীর জন্য ছাড়া হয়।[৭] চলচ্চিত্রটি এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি আইমেক্সসহ মোট ৩,৫৫৩ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।
অ্য গুড ডে টু ডাই হার্ড ৪ জুন, ২০১৩ সালে ডিভিডি ও ব্লু-রেতে মুক্তি পায়।[৮] চলচ্চিত্রটিতে একটি বর্ধিত অংশ রয়েছে যা শুধ ব্লু-রে ভার্সনেই পাওয়া যায়। বক্স অফিসঅ্য গুড ডে টু ডাই হার্ড $৯২ মিলিয়ন বাজেটের বিপরীতে শুধু উত্তর আমেরিকাতেই $৬৭,৩০৫,১৫৯ ও অন্যান্য টেরিটোরি সহ বিশ্বব্যাপী মোট $৩০৩,৭২৫,০৭৫ ডলার আয় করে। প্রদর্শনীর প্রথম রাতেই ২,৩২৮ প্রেক্ষাগৃহ থেকে মোট $৮৪০,০০০ ডলার আয় করে এবং এক সপ্তাহ পর $১০,৮৬০,০০০ ডলার আয় করে। সিক্যুয়ালডাই হার্ড সিরিজের ষষ্ঠ চলচ্চিত্রের নাম ঘোষণা করা হয়েছে “ডাই হার্ডেস্ট”। ব্রুস উইলিস পূর্বের মতই জন ম্যাকক্লেইন চরিত্রে অভিনয় করবেন। চলচ্চিত্রটির শ্যূটিং হবে টোকিওতে। তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ |