Share to:

 

আবুল হাসেম

আবুল হাসেম
মৃত্যু২০১১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

আবুল হাসেম (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ২০১১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।[]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আবুল হাসেমের জন্ম নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার চাপরাশির হাট ইউনিয়নের চর ফকিরা গ্রামে। তার বাবার নাম আলী আজম। তার স্ত্রীর নাম আরবের নেছা। তার পাঁচ মেয়ে, দুই ছেলে। []

কর্মজীবন

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে চাকরি করতেন আবুল হাসেম। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধ যুদ্ধ শেষে যুদ্ধ করেন ৪ নম্বর সেক্টরে।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার জৈন্তাপুর-জকিগঞ্জ সড়কটি ছিলো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে। কানাইঘাটে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্তিশালী অবস্থান। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা জকিগঞ্জ ও আটগ্রাম দখল করার পর দ্রুত এগোতে থাকেন সিলেটের দিকে। তারা বাধাপ্রাপ্ত হন কানাইঘাটে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্তিশালী এই প্রতিরক্ষা অবস্থান দখলের দায়িত্ব ছিল নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর ‘জেড’ ফোর্সের ওপর। শেষ পর্যন্ত সে দায়িত্ব বর্তায় মুক্তিবাহিনীর ৪ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর। ১ ডিসেম্বর ৪ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি দল একযোগে কানাইঘাটে অভিযান শুরু করে। একটি দল দরবস্ত-কানাইঘাট সড়কে আর অন্য দল চরঘাট-কানাইঘাট সড়কে কাট অব পার্টি হিসেবে অবস্থান নেয়। এর ফলে দুই দিক পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য সাহায্য আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়। দুটি দল আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনীর ওই দলে ছিলেন আবুল হাসেম। সহযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে আবুল হাসেম ঝাঁপিয়ে পড়লেন পাকিস্তানি সেনাদের ওপর। প্রবল আক্রমণে দিশেহারা পাকিস্তানি সেনারা। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের গুলিতে পাইকারিহারে হতাহত হতে থাকল তারা। ঘণ্টা দেড়েক পর পাকিস্তানি সেনারা রণে ভঙ্গ দিয়ে পালানোর পথ খুঁজতে থাকল। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সে সুযোগ দিলেন না। ২ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা যে যার অবস্থানে অবস্থান নেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যাপক আর্টিলারির গোলাবর্ষণ শুরু করে। এসব উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা সামনে এগিয়ে যান। সকাল হওয়ার আগেই তারা পাকিস্তানি সেনাদের তিন দিক দিয়ে ঘেরাও করে ফেলেন। দেড় ঘণ্টা পর পাকিস্তানি সেনারা রণে ভঙ্গ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতে থাকে। তখন আনুমানিক সকাল সাতটা, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের সে সুযোগ দেননি। তারা উপর্যুপরি আক্রমণ চালাতে থাকেন। ১৫ মিনিট পর তারা সরাসরি ঘাঁটির ওপর আক্রমণ শুরু করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে অধিকাংশ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। বাকিদের কিছু পালিয়ে যায় সুরমা নদীর তীরে। নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাদের শরীর। সকাল সাড়ে আটটার মধ্যেই মুক্ত হয়ে যায় কানাইঘাট। এই যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অসংখ্য সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর ১১ জন শহীদ ও ২০ জন আহত হন। এই যুদ্ধে আবুল হাসেম অসীম সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শন করেন। []

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ০২-০২-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৪১। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ২৯৮। আইএসবিএন 9789849025375 

বহিঃসংযোগ

Prefix: a b c d e f g h i j k l m n o p q r s t u v w x y z 0 1 2 3 4 5 6 7 8 9

Portal di Ensiklopedia Dunia

Kembali kehalaman sebelumnya