জর্জ লোহম্যান
জর্জ আলফ্রেড লোহম্যান (ইংরেজি: George Lohmann; জন্ম: ২ জুন, ১৮৬৫ - মৃত্যু: ১ ডিসেম্বর, ১৯০১) কেনসিংটনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। তাকে সর্বকালের সেরা বোলারদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।[১] পরিসংখ্যানগতভাবে সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সর্বনিম্ন টেস্ট বোলিং গড়ের রেকর্ড তিনি ধারণ করে আছেন যারা কমপক্ষে পনের উইকেট লাভ করেছেন। আইসিসি রেটিং প্রথায় বোলার হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করে আছেন জর্জ লোহম্যান। এছাড়াও তিনি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রতি উইকেট লাভে সবচেয়ে কম বল প্রদানের রেকর্ডও তার দখলে রয়েছে। কাউন্টি ক্রিকেট১৮৮৪ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সারে দলের হয়ে দশটি খেলায় অংশ নেন। বোলিংয়ে তিনি অল্প সাফল্য লাভ করলেও ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা লাভ না করায় তাকে দলের নিয়মিত সদস্যরূপে রাখা হয়নি। কিন্তু পরের বছর তার কৌশলের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়নি। তিনি শুধু যে সারের শীর্ষস্থানীয় বোলার ছিলেন না তা নয়, বরং ১৪২ উইকেট নিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শীর্ষস্থানীয় উইকেটলাভকারী বোলার ছিলেন। এছাড়াও, উদীয়মান ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫৭১ রান সংগ্রহ করেন। ১৮৮৫ সালেও লোহম্যান তার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখেন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবর্তিত কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের উদ্বোধনী আসরে সারের দলীয় সঙ্গী জন শার্পের সাথে অবিস্মরণীয় জুটি গড়ে দলের প্রথম শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে, দলে উইকেট লাভে সক্ষম বোলারদের উপযোগী থাকায় বিকল্প বোলারের তেমন প্রয়োজন পড়তো না। প্রায়শঃই তার দাপটে ম্রিয়মাণ অবস্থায় থাকতে হতো জন শার্পকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট১৮৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে এক উইকেট, লর্ডসে কোন উইকেট লাভ না করা স্বত্ত্বেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে চমৎকার ক্রীড়াশৈলীর দরুণ ওভালে অনুষ্ঠিত শেষ টেস্টেও তাকে রাখা হয়। ঐ টেস্টে লোহম্যান নিজেকে সেরা বোলার হিসেবে মেলে ধরেন। প্রথম ইনিংসে ৩৬ রানে ৭ ও ৬৮ রানে ৫ উইকেট সর্বসাকুল্যে ১০৪ রানে ১২ উইকেট লাভ করেন ও অ্যাশেজ সিরিজের অন্যতম জয় পায়। পুনরায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শীর্ষস্থানীয় উইকেট সংগ্রহকারী হিসেবে আলফ্রেড শ’য়ের ইংল্যান্ড দলের অন্যতম সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরের সুযোগ লাভ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা গমন১৮৯৫-৯৬ মৌসুমে ইংরেজ দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন তিনি। সফরকারী ঐ দলটি মূলতঃ মাইনর কাউন্টি কিংবা ক্লাব ক্রিকেটের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠন করা হয়েছিল। তন্মধ্যে, দলের খুব কমসংখ্যক খেলোয়াড়ই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের সাথে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে ঐ খেলাগুলো টেস্টের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়। ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৬ সালে পোর্ট এলিজাবেথে অনুষ্ঠিত টেস্টে জর্জ লোহম্যানের ৭/৩৮ ও ৮/৭ বোলিংয়ের কল্যাণে সফরকারীরা খুব সহজেই ২৮৮ রানে বড় ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। লোহম্যান হ্যাট্রিক করেছিলেন।[২] মার্চ, ১৮৯৬ সালে জোহেন্সবার্গের ২য় টেস্ট ও কেপটাউনের ৩য় টেস্টেও তিনি তার বোলিংয়ের দাপট অব্যাহত রাখেন। ৯/২৮, ৩/৪৩ এবং ৭/৪২ ও ১/৪৫ পেয়েছিলেন। খেলার ধরনতিনি মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। সেরা ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে লোহম্যান তার সেরা বোলিং প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ধরনের পেস বোলিং করতেন। স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে তিনি কাউন্টি ক্রিকেটে মারমুখী ব্যাটসম্যানরূপে ১৮৮৭ সালে সারে দলের হয়ে ২৫ রান গড়ে দু’টি শতক করেছেন। সবচেয়ে কম টেস্ট খেলে তিনি ১০০ উইকেট লাভ করেন। এরজন্য তিনি মাত্র ১৬ টেস্ট খেলেন।[৩] ১৮৮৯ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক কর্তৃক লোহম্যানকে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হয়।[৪] প্রকৃতপক্ষে ঐ সময় বর্ষসেরা ছয়জন বোলার হিসেবে মনোনীত করা হতো। তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
আরও পড়ুন
বহিঃসংযোগউইকিমিডিয়া কমন্সে জর্জ লোহম্যান সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
|