মম্মুট্টী
মামুট্টি (জন্ম মোহাম্মাদ কুট্টি ইসমাইল পানিপারামবিল; ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৫১),[১][৪] হলেন একজন বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক, যিনি প্রধানত মালায়ালাম ছবিতে কাজ করে থাকেন। এছাড়াও তিনি অসংখ্য তামিল, হিন্দি, তেলুগু, এবং কন্নড় সিমেমায় অভিনয় করেছেন। তার তিন যুগের অধিক সময়ে ধরে চলচ্চিত্র জীবনে তিনি ৩৬০টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি মালায়ালম ছবিতে দ্বৈত ভূমিকায় (নয়টি) সর্বোচ্চ সংখ্যক অভিনয় করেছেন।[৫] মামুট্টি অভাবগ্রস্ত মানুষ সাহায্য করার লক্ষ্যে অর্ধ ডজন সেবামুলক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন।[৬] তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলি সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধান করে থাকেন।[৭] তিনি কেরালায় ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে জীবনের মান উন্নীকত করার উদ্দেশ্য নিয়ে একটি দাতা সংস্থা গঠন করেন। এছাড়াও তিনি ভারতের কোজিকোডে ব্যথা উপশমক সেবা কেন্দ্রে কাজ করে আসছেন।[৮] তাকে সেরা অভিনেতা হিসেবে ৩ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) ভূষিত করা হয়েছে। তিনি ৫ বার কেরালা পুরস্কার এবং ১১ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন। ১৯৯৮ সালে, তিনি শিল্পকলার প্রতি তার অসাধারন অবদানসমূহের জন্য পদ্মশ্রী পুরস্কার লাভ করেন।[৯] জানুয়ারি ২০১০ সালে কেরালা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে "ডক্টর অব লেটার" পদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়[১০] এবং ডিসেম্বর ২০১০ সালে "কালিকুট বিশ্ববিদ্যালয়" থেকে[১১] মামুট্টিতে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একজন মহাতারকা হিসেবে গণ্য করা হয়।[১২] মামুট্টি মালায়ালম কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান এর দায়িত্বে রয়েছেন, যেখান থেকে তার জনপ্রিয় মালায়ালাম টেলিভিশন চ্যানলে "কাইরালী টিভি", "পিপল টিভি" এবং "উই টিভি" সম্প্রচারিত করা হয়ে থাকে।।[১৩] এছাড়াও তিনি অকসয়া প্রকল্পের ব্রান্ড এ্যাম্বেসডর হিসেবে কাজ করছেন।[১৪] পরিবার এবং প্রাথমিক জীবনমামুট্টি ভারতের কেরালায় একটি মধ্যবিত্ত মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে মোহাম্মাদ কুট্টি ইসমাইল পানিপারামবিল নাম নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তার পিতা ইসমাইল কৃষি কাজ করতেন এবং তার মাতা ফাতিমা ছিলেন গৃহিনী। মামুট্টি এর পিতা ১৯৬০ সালের সময় এর্নাকুলাম তার পরিবারসহ স্থানান্তরিত হন; তার স্কুল জীবন ছিল "সেন্ট এলবার্ট স্কুল" এবং "সরকারী এর্নাকুলাম স্কুল"। তিনি কচির মহারাজা কলেজ থেকে প্রি ডিগ্রী এবং তারপর সরকারি এর্নাকুলাম ল কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি দুই বছর ধরে আইন বিষয়ে অনুশীলন করেন। এরপর তিনি ১৯৮০ সালে সুলফাত এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহিত জীবনে তার এক মেয়ে সুরুমি (জন্মঃ ১৯৮২) এবং ছেলে দুলকার সালমান (জন্মঃ ১৯৮৬) রয়েছে। মামুট্টির ছোট ভাই ইব্রাহিম কুট্টি মালায়ালমের একটি টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র অভিনয় করে থাকেন। ইব্রাহিম কুট্টির ছেলে মকবুল সালমান হলেন আরও একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা। [১৫] অভিনয় জীবনপ্রাথমিক জীবন (১৯৭১-১৯৮০)মামুট্টির ১৯৭১ সালে "অনুভাবানজাল পালিচাকাল" ছবির মাধ্যেম চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন, যেটি পরিচালনা করেছিলেন সেতুমাধবন আর ছবিটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সত্যন, প্রেম নজির এবং শীলা।[১৬] তার দ্বিতীয় ছবি ছিল কালাচক্রাম (১৯৭৩) মালায়ালাম ছবি; পরিচালনা করেন কে নারায়ন। এই ছবিতে মাত্র একটি দৃশ্যে তিনি অভিনয় করেন। তিনি সাজিন নামের অধীনে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় অভিনয় করার কথা থাকলেও পরবর্তীকালে বাদ পড়ে যান।[১৭] তার পেশাদার চলচ্চিত্র কর্মজীবন ১৯৭৯ সালে শুরু হয়, তিনি তার প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান এম,টি, বসুদেভান নায়ারের পরিচালনায় "দেভালোকাম" ছবিতে। তবে এই ছবিটি শেষ পর্যন্ত শেষ করা হয়নি।[৩][১৮] তার পরবর্তী ছবি ১৯৮০ সালের "বিক্কানুন্ডু সপ্নাঙ্গা", ছবিটি পরিচালনা করেন আজাদ, লিখেছেন এম,টি, বসুদেব নায়ার এবং অভিনয় করেন প্রধান চরিত্রে সুকুমারান।[১৯] ছবিটিতে তিনি সহকারী চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটিতে মামুট্টির কন্ঠ দিয়েছিলেন অভিনেতা শ্রীনিবাসন। মামুট্টির প্রথম দীর্ঘ চরিত্রে অভিনয় করেন ১৯৮০ সালের মেলা ছবিটিতে। ১৯৮০–১৯৮৩মামুট্টি নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা হিসেবে প্রকাশ করেন ১৯৮০ সালের "স্পদানাম", যেটি পরিচালনা করেন পিজি বিশ্ববর্মন।[২০][২১] ১৯৮১ সালে তিনি প্রথম সহকারী অভিনেতা হিসেবে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার লাভ করেন।[২২] তার উল্লেখযোগ্য ছবি যেমন, আলখোত্তাহিল থানিয়ে এবং আদিওঝুক্ককাল, তাকে মালায়ালাম ছবিতে প্রধান চরিত্রে প্রতিষ্ঠিত করে।[২৩] তিনি অনুসন্ধানী থ্রিলার ছবি যবনিকাতে একজন পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন। ১৯৮৪–১৯৯৩১৯৯৪-২০০০২০০০-২০১০২০১০–বর্তমানঅন্যান্য ভাষায় ছবিআন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবে দেখানো ছবিসমাজসেবামুলক কাজমামুট্টি অভাবগ্রস্ত মানুষ সাহায্য করার লক্ষ্যে অর্ধ ডজন সেবামুলক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন।[৬] টেলিভিসন কর্মজীবনমিডিয়া জগৎঅন্যান্য কার্যক্রমপুরস্কার, সম্মান ও স্বীকৃতিমামুট্টি সেরা অভিনেতা হিসেবে ৩ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) ভূষিত করা হয়েছে। তিনি ৫ বার কেরালা পুরস্কার এবং ১১ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন। ১৯৯৮ সালে, তিনি শিল্পকলার প্রতি তার অসাধারন অবদানসমূহের জন্য পদশ্রী পুরস্কার লাভ করেন[২৪] জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
চলচ্চিত্রের তালিকাতথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগউইকিমিডিয়া কমন্সে মম্মুট্টী সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |