কেদারনাথ ভট্টাচার্য (জন্ম- ২০ অক্টোবর ১৯৫৭) (যিনি কুমার শানু নামেই পরিচিত), জন্ম গ্রহণ করেন কলকাতায়, ভারতের একজন উল্লেখযোগ্য বলিউডগায়ক।[২] তিনি সেরা নেপথ্য পুরুষ কণ্ঠশিল্পী হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান পর পর পাঁচ বার। তাকে ভারত সরকার ২০০৯ সালে পদ্মশ্রী তে সম্মানিত করে।[৩]31 মার্চ - কুমার সানু দিবস: আমেরিকায় এমন সম্মান অর্জনকারী প্রথম ভারতীয় গায়ক ২০০১ মাইকেল আর টার্নার, মেয়র, ডেটন, ওহাইও কর্তৃক ঘোষিত।[৪]
প্রথম জীবন
কুমার শানুর পিতা পশুপতি ভট্টাচার্য্য ছিলেন একজন গায়ক ও সুরকার। তার পৈতৃক নিবাস ও জন্মস্থান ছিল ঢাকার অদূরে বিক্রমপুরের হাসাড়া গ্রামে। তিনি জীবিকার তাগিদে কলকাতায় আসেন এবং কুমার শানু কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শানুকে গান ও তবলা শেখান। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হওয়ার পর কুমার শানু ১৯৭৯ সালে প্রকাশ্যে কার্যক্রম করা শুরু করেন, গান গাওয়া শুরু করেন হোটেল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কলকাতায়। কিশোর কুমার পরে ওনাকেই বলিউড শৈলীর গানের অনুপ্রেরণা বলে ধরা হয়।[৫] পরবর্তিকালে তিনি নিজের শৈলিতে গান গাওয়া শুরু করেন।[৫] তিনি ছিলেন ১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যেকার সেরা গায়ক।
পেশা
১৯৮৭ সনে, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক জগজিত সিং হিন্দি ছবি আন্ধিয়া তে গান গাওয়ার প্রস্তাব দেন কুমার শানুকে। শানু তখন মুম্বাই তে চলে আসেন, যেখানে কল্যাণজী-আনান্দজী তাকে গান গাওয়ার সুযোগ দেন হিন্দি ছবি যাদুকর এ। কল্যাণজী-আনান্দজী তাকে তার নাম কেদারনাথ ভট্টাচার্য' থেকে কুমার শানু করার প্রস্তাব দেন।[৫]
শানু জগজিত সিং এর ছবিতে গান গাওয়া বন্ধ করেন এবং পরে তিনি চলে যান কাজ করতে সুরকার নওশাদ, রাভিন্দ্র জেইন, হৃদয় নাথ মঙ্গেশকর, পিটি, আর, কে, রাজদান, কল্যাণজী-আনান্দজী ও উষা খান্না এর সাথে।
১৯৯০ এর ছবি আশিকি এর জন্য সংগীত পরিচালক নাদীম-শ্রবন খুজে পান কুমার শানুকে গান গাওয়ার জন্য। যার মধ্যে আছে "এক সনম চাহিয়ে", "তু মেরি জিন্দেগি হে", "নজর কে সামনে", "জানে জিগর জানেমন", "আব তেরে বিন জিলেংগে হাম" এবং "ধিরে ধিরে সে"। তিনি পর পর পাঁচবার পুরুষ গায়ক হিসেবে ফিল্মফেয়ার এওয়ার্ড জিতে রেকর্ড গড়েছেন। তার পরবর্তী পুরস্কার এসেছে হিন্দি ছবি সাজন (১৯৯১), দিওয়ানা (১৯৯২), বাজিগর (১৯৯৩) এবং ১৯৪২: এ লাভ স্টোরি (১৯৯৪) থেকে।
শানু প্রায়ই কাজ করেছেন নাদীম-শ্রবন এর সাথে । তাদের কিছু সহযোগিতা মূলক গানের ছবি গুলো হলো আশিকি (১৯৯০), দিল হ্যায় কি মানতা নেহি (১৯৯১), সড়ক (১৯৯১), সাজন (১৯৯১), দিওয়ানা (১৯৯২), দিল কা কিয়া কাসুর (১৯৯২), কাল কা আওয়াজ' (১৯৯২), মিস্টার আশিক (১৯৯৩), সালামী (১৯৯৩), দামিনী (১৯৯৩), দিলওয়ালে (১৯৯৪), অগ্নি সাক্ষী (১৯৯৬), রাজা হিন্দুস্থানী (১৯৯৬), জীত (১৯৯৬), পরদেশ (১৯৯৭), এগুলো ছাড়াও আরো।
তিনি ভারতীয় ছবির জন্য গান তৈরি করেছেন এবং উত্থান নামে এক বলিউড ছবিও প্রযোজনা করেছেন [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]। বর্তমানে কুমার শানু'র দল কাজ করছে রাকেশ ভাটিয়া এর সাথে এবং তারা এক সাথে প্রযোজনা করছেন হিন্দি ছবি যা তৈরি হচ্ছে মুম্বাই এর চার জন পথ শিশুদের নিয়ে [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]। তাদের চার জন'ই রেলওয়ে প্লাটফর্মে জুতো পালিশের কাজ করে প্রতিদিনের রুটি আর মাখনের জন্য। মিঠুন চক্রবর্তী এই ছবিতে প্রধান নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সাম্প্রতিক কুমার শানু একটা কাব্যিক বাংলা ছবি হাসন রাজা এর জন্য গান গেয়েছেন, যা পরিচালনা করেছেন যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পরিচালক রুহুল আমিন।
শানু প্যানেল বিচারক ছিলেন সনি টিভি এর ওয়ার পরিবার, ঘরোয়া গায়কদের এক সাথে করার রিয়েলিটি শো যা ছিল জি বাংলা টিভিতে এবং একটি গানের রিয়েলিটি শো যার নাম ছিল সা রে গা মা পা - বিশ্ব সেরা।